শ্রী প্রশান্ত কুমার সুএ ধর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ শহরে দীর্ঘদিন ধরেই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আসছে মৌমিতা ও গ্রীণ অনাবিল পরিবহন। নারায়ণগঞ্জ সড়ক জুড়েই তাদের রাজত্ব। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে সকলেই এই দুই পরিবহনের প্রতি বিরক্ত। তারপরেও যেন তাদের কোনোভাবেই দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না। বরাবরই নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলে আসছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মৌমিতা ও গ্রীণ অনাবিল রাজত্ব যেন দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না।
শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভাতেও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ মৌমিতা ও গ্রীণ অনাবিল পরিবহনের বাস নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সেই সাথে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের কথাও বলেছেন।
এদিন নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষ্যে ‘গতিসীমা মেনে চলি, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আর এই অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএ সহকারী পরিচালক সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, শহরে যানজটের মূলই হল অনাবিল, মৌমিতা, বন্ধু পরিবহন।
তিনি বলেন, এই সকল পরিবহনের অর্ধেকই নাই। বডি তো খোয়ে খোয়ে পরে। গাড়ির ভিতরে সিট নাই, গাড়ির সামনে মাথাভাঙ্গা। আমার মনে হয় এই বাসগুলোর কোন ফিটনেস নাই। সকল বাসগুলোর কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। আমি এসপি সাহেব কে বলে দিচ্ছি আর স্টেডিয়ামের সামনে ১০০ বাস রাখার ব্যবস্থা করে দিবো। এগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
সেই সাথে বিআরটিএ বলে দেন তাদের ফিটনেস ঠিক আছে কিনা দেখার জন্য।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলাচলের জন্য মৌমিতা পরিবহনের ৩০টি বাসের অনুমোদন নেয়া হলেও চলছে ৭০ থেকে ৮০টি বাস। বাসগুলোর বেশীরভাগেরই ফিটনেস নেই। কিন্তু তারপরেও থেমে নেই অবৈধ চলাচল। নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করেই নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট নামের একটি বাস কোম্পানী। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের কোথাও কাউন্টারের অস্তিত্ব নেই। ফলে যত্রতত্র উঠানামা করছে যাত্রীগণ। প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ থেকে চন্দ্রা, ইপিজেড, নবীনগর, সাভার, হেমায়েতপুর, গাবতলী, শ্যামলী, আসাদগেট, আজিমপুর, বকশীবাজার, চানখারপুল চলাচল করছে এই বাসটি।
মৌমিতার মতো অনাবিল পরিবহনের বাসগুলোরও রুট পারমিট ও ফিটনেস নেই। নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে গাজীপুরে অনাবিল ও অনাবিল সুপার পরিবহন নামের দুটি কোম্পানির ২০০ বাস-মিনিবাস চলাচল করে। এর মধ্যে রুট পারমিট রয়েছে ২০-২৫টির। রুট পারমিটে অনাবিল সুপারের গাজীপুরের এরশাদনগর পর্যন্ত চলার অনুমোদন রয়েছে। আর অনাবিলের রুট পারমিট রাজধানীর উত্তরার ধওর পর্যন্ত। কিন্তু দুটি পরিবহনই ১০-১২ বছর ধরে অবৈধভাবে গাজীপুরের কোনাবাড়ী পর্যন্ত চলাচল করছে। এক বছর ধরে চলছে নগরীর তেলিপাড়ার বিআরটিসি ট্রেনিং সেন্টার পর্যন্ত। ফিটনেস সনদ বাগিয়ে বেপরোয়াভাবে সড়কে চলছে অনাবিলের লক্কড়-ঝক্কড় বাস। বেশির ভাগ চালকেরই লাইসেন্স নেই।